নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের ডাক্তারদের তালিকা
বাংলাদেশে নিউরোসায়েন্সের চিকিৎসা ক্ষেত্র দিন দিন অগ্রগতি সাধন করছে। মস্তিষ্ক, মেরুদণ্ড, এবং স্নায়ুতন্ত্র সংক্রান্ত সমস্যাগুলির চিকিৎসায় এই বিশেষায়িত হাসপাতালগুলি অপরিসীম অবদান রাখছে। এই প্রতিবেদনে আমরা বাংলাদেশের কিছু প্রধান নিউরোসায়েন্স হাসপাতাল এবং নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের ডাক্তারদের তালিকা ও বিশেষত্ব তুলে ধরবো।
বাংলাদেশের নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের ডাক্তারদের তালিকা
১. বাংলাদেশ নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউট (BNI)
ঢাকার শ্যামলি অঞ্চলে অবস্থিত এই ইনস্টিটিউটটি নিউরোলজি, নিউরোসার্জারি, এবং নিউরোরিহ্যাবিলিটেশন ক্ষেত্রে উন্নত চিকিৎসা প্রদান করে।
প্রধান ডাক্তারগণ
ডা. মোহাম্মদ রাকিবুল হাসান**: নিউরোলজি বিভাগের প্রধান। তিনি স্ট্রোক এবং এপিলেপ্সি চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ।
ডা. সালমা বেগম**: নিউরোসার্জারি বিশেষজ্ঞ। তাঁর বিশেষত্ব হলো মস্তিষ্কের টিউমার অপারেশন।
২. ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেস এন্ড হাসপিটাল (NINH)
ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত, এই হাসপাতালটি স্নায়ুবিজ্ঞানের উপর বাংলাদেশের অন্যতম অগ্রগণ্য প্রতিষ্ঠান।
প্রধান ডাক্তারগণ
ডা. আবদুল মজিদ খান**: নিউরোলজি বিশেষজ্ঞ। তিনি নিউরোডিজেনারেটিভ ডিসিজের চিকিৎসায় অভিজ্ঞ।
ডা. ফাহিমা খাতুন: নিউরোপ্যাথি এবং হেডাকের বিশেষজ্ঞ।
৩. ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগ
এই বিভাগটি নিউরোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার চিকিৎসায় বিশেষভাবে নামকরা। এই নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের ডাক্তারদের তালিকা হলো নিম্নরূপ:
প্রধান ডাক্তারগণ
ডা. জাহিদ হোসেন: সেরিব্রোভাসকুলার ডিজিজের একজন অভিজ্ঞ চিকিীৎসক।
ডা. রিফাত জাহান: স্নায়ুসংক্রান্ত চোটের চিকিৎসায় দক্ষ।
৪. স্কয়ার হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগ
ঢাকায় অবস্থিত স্কয়ার হাসপাতাল তার উন্নত মানের নিউরোলজি চিকিৎসা প্রদানে খ্যাত।
প্রধান ডাক্তারগণ
ডা. মুনিরুজ্জামান: নিউরোইনফেকশাস ডিজিজের চিকিৎসায় অগ্রগণ্য।
ডা. নাজিমা আক্তার: পেডিয়াট্রিক নিউরোলজিতে স্পেশালাইজড।
৫. ইবনে সিনা হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগ
এই বিভাগটি ঢাকায় অবস্থিত এবং বিভিন্ন নিউরোলজিক্যাল টেস্টের জন্য বিখ্যাত।
প্রধান ডাক্তারগণ
ডা. হামিদুর রহমান: নিউরোমাস্কুলার ডিজিজের চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ।
ডা. সালেহা বেগম: মাইগ্রেন এবং অন্যান্য হেডাকের চিকিৎসায় নিপুণ।
নিউরোসায়েন্সের চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের এই হাসপাতালগুলি এবং ডাক্তারদের ভূমিকা অপরিসীম। এরা না কেবল নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি উদ্ভাবনের মাধ্যমে, বরং নিরন্তর গবেষণা এবং শিক্ষার মাধ্যমে মানবজাতির সেবা করে যাচ্ছে। আসুন, আমরা এই বিশেষজ্ঞদের অবদানকে সম্মান জানাই এবং নিউরোসায়েন্সের এই যাত্রায় তাদের সঙ্গী হই।
কেন চিকিৎসা করাবেন নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে?
বাংলাদেশের নিউরোসায়েন্স হাসপাতাল হল দেশের একমাত্র স্পেশিয়ালাইজড্ হাসপাতাল যা মস্তিষ্ক, স্নায়ু এবং স্পাইনাল কর্ড সংক্রান্ত রোগ চিকিৎসায় বিশেষায়িত। এই হাসপাতালটি দেশের নিউরোলজি ও নিউরোসার্জারি ক্ষেত্রে একটি প্রধান হাব হিসাবে কাজ করে থাকে। এই হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর মূল কারণগুলি নিম্নরূপ:
১. বিশেষায়িত চিকিৎসা পরিষেবা: নিউরোসায়েন্স হাসপাতালটি মস্তিষ্ক, স্নায়ু এবং স্পাইনাল কর্ড সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগের বিশেষায়িত চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করে। এখানে নিউরোলজি, নিউরোসার্জারি, রেডিওলজি, ন্যুক্লিয়ার মেডিসিন প্রভৃতি বিভাগ রয়েছে যেখানে দক্ষ চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীরা কাজ করেন।
২. উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার: নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় যেমন - ইনট্রা-অপারেটিভ ইউএস, নেভিগেশন সিস্টেম, ইনট্রা-অপারেটিভ এমআরআই, ইন্ট্রা-অপারেটিভ সি-টি স্ক্যান, রোবটিক সার্জারি আর্টিকুলার ন্যুরোন্যুমাটিক ডিভাইস ইত্যাদি। এই উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে চিকিৎসকরা জটিল মস্তিষ্ক ও স্নায়ু সংক্রান্ত রোগের সফল চিকিৎসা করতে পারেন।
৩. দক্ষ চিকিৎসক দল: নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে দেশের শীর্ষস্থানীয় নিউরোলজিস্ট ও নিউরোসার্জন কর্মরত আছেন। তাঁরা নিউরোলজি, নিউরোসার্জারি, ন্যুক্লিয়ার মেডিসিন, রেডিওলজি প্রভৃতি বিষয়ে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেছেন এবং জটিল রোগের সফল চিকিৎসা করে থাকেন।
৪. উন্নত শল্যচিকিৎসা: নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে শল্যচিকিৎসার সর্বাধুনিক প্রক্রিয়া ও প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এখানে ইনট্রা-অপারেটিভ নেভিগেশন সিস্টেম, রোবটিক সার্জারি, এন্ডোস্কোপিক সার্জারি, মাইক্রোসার্জারি ইত্যাদি প্রযুক্তি ব্যবহার করে জটিল শল্যচিকিৎসা সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়।
৫. গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম: নিউরোসায়েন্স হাসপাতালটি নিউরোলজি ও নিউরোসার্জারি ক্ষেত্রে গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করে। এখানে নিউরোলজি, নিউরোসার্জারি, রেডিওলজি, ন্যুক্লিয়ার মেডিসিন প্রভৃতি বিভাগে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এছাড়াও বিভিন্ন গবেষণা কাজও এখানে চলমান রয়েছে।
৬. বিশেষায়িত রোগ ব্যবস্থাপনা: নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে মস্তিষ্ক, স্নায়ু ও স্পাইনাল কর্ড সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত ব্যবস্থাপনা করা হয়। এখানে রয়েছে ট্রমা ও প্রাণঘাতী অবস্থা ব্যবস্থাপনার জন্য ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ), স্ট্রোক ইউনিট, রেস্পিরেটরি কেয়ার ইউনিট, নেভিগেশন সিস্টেম সহ বিভিন্ন বিশেষায়িত ইউনিট।
উপরোক্ত কারণগুলির জন্য বাংলাদেশের নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসা করানো রোগীদের জন্য একটি বড় সুযোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের ডাক্তারদের তালিকা থেকে জানা যায় যে কত রকমের বিশেষায়িত চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যায় এবং জটিল নিউরোলজিক ও নিউরোসার্জিক্যাল রোগের সফল চিকিৎসা সম্ভব হয়।